‘অ্যাডভোকেট’ আর ‘ব্যারিস্টার’—এ দুটোর মধ্যে পার্থক্য কী? কে বড় এঁদের মধ্যে এমন প্রশ্ন তাড়া করে না এমন লোক পাওয়া কঠিন। বিলেত থেকে ব্যারিস্টারি পড়ে এলেই কি বড় পদের কেউ হয়ে গেল? এমন প্রশ্নও করতে শোনা যায় অনেককে। আসলেই কী পার্থক্য এ দুটোর মধ্যে? এ প্রশ্নের জবাব যদি একবাক্যে বলতে হয় তাহলে বলা যায়, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ব্যারিস্টার মানেই অ্যাডভোকেট বা আইনজীবী নন। কেউ ব্যারিস্টারি পাস করে এলেই তাঁকে আইনজীবী বলা যাবে না। বার কাউন্সিল আইন অনুযায়ী, একজন ব্যারিস্টারকে আগে ‘অ্যাডভোকেট’ বা ‘আইনজীবী’ হিসেবে সনদ নিতে হবে। তবেই ব্যারিস্টাররা অ্যাডভোকেট হবেন। অর্থাৎ, বলা চলে, ‘অ্যাডভোকেট’ হচ্ছে পেশাগত পদের নাম আর ব্যারিস্টার হচ্ছে বিলেত থেকে নেওয়া একটি সম্মানজনক সনদ।
‘আইন শব্দকোষ’-এ ‘ব্যারিস্টার’ শব্দের ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে, ইংল্যান্ডের ইনস অব কোর্টের তালিকাভুক্ত ছাত্র হিসেবে কাউন্সিল অব লিগ্যাল এডুকেশনের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে যাঁরা সনদপ্রাপ্ত।
১৯২৬ সালের বার কাউন্সিল আইন অনুযায়ী, ব্যারিস্টার ও অ্যাডভোকেটদের মধ্যে পার্থক্য দূর করে সবাইকে শুধু ‘অ্যাডভোকেট’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার বিধান চালু হয়। এখন বাংলাদেশে সুপ্রিম কোর্টসহ বিভিন্ন বারে তালিকাভুক্ত সব ব্যারিস্টার আর অ্যাডভোকেটকে শুধু অ্যাডভোকেট বলেই সম্বোধন করতে হয়। বার কাউন্সিল আইনে ব্যারিস্টারকে আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। বাংলাদেশে অনেক খ্যাতিমান ‘অ্যাডভোকেট’ আছেন, যাঁরা ব্যারিস্টার নন। তাঁদের মধ্যে প্রখ্যাত আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান আইনজীবী আনিসুল হকের নাম উচ্চারণ করা যায়, যাঁরা ব্যারিস্টার নন। মূলত, আইনজীবী হিসেবে কে ভালো করবেন তা নির্ভর করে তাঁর পেশাগত দক্ষতা ও জ্ঞানের ওপর। আদালতের ভেতর সবাই আইনজীবী অর্থাৎ অ্যাডভোকেট।
