আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে দিনটি উদযাপিত হবে। ‘প্রজন্ম হোক সমতার, সকল নারীর অধিকার’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পালিত হচ্ছে এবারের নারী দিবস।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় দিবসটি উদযাপনে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
১৯১০ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্কের সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকদের নারী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার প্রতি সম্মান জানাতে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন শুরু করে। তখন থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে মর্যাদা দেয়ার দাবিতে এই দিনে নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসকে স্মরণ করে এবং ভবিষ্যতের পথ পরিক্রমা নির্ধারণ করে। যাতে আগামী দিনগুলো নারীর জন্য আরো গৌরবময় হয়ে ওঠে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এ বছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবস বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশে নারী সমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী অধিকার রক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতা সৃষ্টির জন্য দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, রোববার সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উদ্বোধন অনুষ্ঠান, দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও জাতীয় পর্যায়ে ৫ জন শ্রেষ্ঠ জয়িতাকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য টেলিভিশন ও গণমাধ্যমে টক’শো, বিশেষ নিবন্ধ ও অন্যান্য অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। বাংলাদেশে নারী উন্নয়নে অসামান্য অগ্রগতি, সমতা সৃষ্টি, বৈষম্য হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন, বাল্যবিয়ে বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি, নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও সব ধরণের সহিংসতা বন্ধে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, স্যুভেনির প্রকাশিত ও প্রদর্শিত হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২০ উপলক্ষে আগামী ১৬ থেকে ১৮ মার্চ দেশজুড়ে তিন দিনব্যাপী ‘নারী উন্নয়ন মেলা’ আয়োজন করা হবে।
এদিকে দিনটি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বিকেল সাড়ে ৪টায় ‘নারী উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এতে কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) উদ্যোগে নারী দিবস উপলক্ষে বেলা ১১টায় ডিআরইউ চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি এবং কেক কাটা হবে। পরে ডিআরইউ নারী সদস্য ও সব সদস্যদের পরিবারের নারীদের জন্য ব্রেস্ট স্ক্রিনিং ও ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতামূলক হেলথ ক্যাম্প পরিচালিত হবে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আগামী ১১ মার্চ ডিআরইউ’র উদ্যোগে এক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নারী সদস্যদের বিশেষ সংকলন ‘কণ্ঠস্বর’ এর বিশেষ সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হবে।