নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে পশ্চিমা ক্রেতাদের দেয়া ক্রয়াদেশ বাতিল হচ্ছে একের পর এক। আবার কর্মক্ষেত্রে একসঙ্গে অনেককে কাজ করতে হয় বলে শ্রমিকদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি। এ পরিস্থিতিতে একে একে বন্ধ হতে শুরু করেছে শিল্প-কারখানা।
শিল্প পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, কারখানাগুলোয় ধারাবাহিকভাবে কাজ কমছে। বিদ্যমান কাজ যা আছে সেগুলোতেও বিরতি দিতে হচ্ছে ক্রেতার ইচ্ছে অনুযায়ী। আবার নতুন কোনো কাজও আসছে না। কারখানায় করোনা আতঙ্কের ব্যাপ্তিও বাড়ছে। সব মিলিয়ে কোনো কারখানার মালিক একদিন কাজ চালু রাখলে আরেকদিন বন্ধ রাখছেন। করোনা আতঙ্কে কারখানা বন্ধের ঘটনাও ঘটেছে। গত ২৩ মার্চ মোট তিনটি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে দুটি কারখানা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের কারণ ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। আবার একটি কারখানা করোনা আক্রান্ত শ্রমিক আছে সন্দেহে বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। এছাড়া গতকাল মোট তিনটি কারখানায় বকেয়া বেতনের দাবিতে কাজ বন্ধ থাকলেও পরে সচল হয়।
এদিকে বিজিএমইএ বলছে, মোট সাতটি কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজ থেকেই বন্ধ করেছে। তবে কারখানাগুলোর নাম প্রকাশ করেনি বিজিএমইএ।
কারখানা সচল বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে মালিকদের সহযোগিতা দিচ্ছে বিজিএমইএ। গত ২৩ মার্চ সংগঠনের সব সদস্যের সুবিধার্থে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে সংগঠনটি। সেখানে তারা বলেছে, ভিন্ন প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএর পক্ষে কারখানা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত দেয়া সম্ভব না। কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে। শুধু সরকার কেন্দ্রীয়ভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কারখানা বন্ধ করার প্রয়োজন হলে শ্রম আইনের বিধান অনুসরণ এবং কারখানা বন্ধের নোটিসে মোট পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করার পরামর্শ দিয়েছে বিজিএমইএ। প্রথমটি হলো কারখানা বন্ধের কারণসংক্রান্ত। এ বিষয়ে সংগঠনটি বলেছে, কারখানা বন্ধের কারণ হিসেবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব উল্লেখ করা যেতে পারে। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১২ ও ১৬ উল্লেখ করে কতদিনের জন্য বন্ধ থাকবে এবং সম্ভাব্য খোলার তারিখ উল্লেখ করতে হবে এক্ষেত্রে।
এদিকে কারখানা সচল রাখার পরামর্শও দিচ্ছে পোশাক খাতসংশ্লিষ্টরা। শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সাপেক্ষে পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সভাপতি বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) সভাপতি কাজী ইফতেখার হোসেন।