সমগ্র বাংলাদেশ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, যেহেতু স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করে লাখ লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে। লক্ষাধিক লোক মারা গেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। হাঁচি, কাশি ও পরস্পর মেলামেশার কারণে এ রোগের বিস্তার ঘটে। এ পর্যন্ত বিশ্বে এ রোগের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশনা অনুযায়ী এ রোগের একমাত্র পথ হলো পরস্পর পরস্পরকে নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করা।
যেহেতু জনসাধারণের একে অপরের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা ছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় এবং যেহেতু বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে, সেহেতু সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মল) আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নং আইন) এর ১১(১) ধারার ক্ষমতাবলে সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হলো।
সংক্রমিত এলাকার জনসাধারণকে নিম্নলিখিত নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করার অনুরোধ করা হলো:
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলো। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না।
এ আদেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে ওপরে বর্ণিত আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে আইনের সংশ্লিষ্ট অন্য ধারাগুলো প্রয়োগ করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করবে।
দেশে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে এক চিকিৎসকসহ ৬০ জন মারা গেছেন।
দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এর মধ্যে সাতজন পুরুষ ও তিনজন নারী। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০ জনে। তাদের মধ্যে ঢাকায় ছয়জন ও ঢাকার বাইরে চারজন মৃত্যুবরণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে সর্বমোট ২ হাজার ১৩৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ২ হাজার ১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নতুন করে ৩৪১ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭২ জনে।
এ পর্যন্ত মোট ৪৯ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন।