বাড়িতে গিয়ে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষার্থীদের কাছে বিস্কুট পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। বিষয়টি আমলে নিয়ে উপজেলার চার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিস।
জানা যায়, করোনায় বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই শিশু শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলফিডিংয়ের ৫০ প্যাকেট বিস্কুট বিতরণের জন্য নির্দেশ প্রদান করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর অংশ হিসেবে জলঢাকা উপজেলায় গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার (১৩ ও ১৪মে) শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। পর্যায়ক্রমে জলঢাকা উপজেলার ২৪৫টি প্রাথমিক স্কুলের ৪৭ হাজার শিক্ষার্থীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিস্কুট পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে।
অভিভাবক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অভিযুক্ত স্কুলের শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের বিস্কুট নিতে স্কুলে আসতে বলেন। দীর্ঘদিন পর স্কুলে আসার কথা শুনে ছুটে আসে শিক্ষার্থীরা। ফলে স্কুল মাঠে শুরু হয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন সমাগম। ভেঙ্গে পরে সামাজিক দুরত্ব মানার নির্দেশনাও।
এমন অভিযোগের খবর পেয়ে চার প্রাথমিক স্কুলের প্রধানদের কারণ দর্শানো নোটিশ করেছে জলঢাকা শিক্ষা অফিস। ওই চার প্রতিষ্ঠান হল- ঘুঘুমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিড়াভিজা গোলনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধর্মপাল উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোলনা রথবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলার গোলনা রথবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার এক বাসিন্দা জানান, সামাজিক দূরত্ব না মেনে হৈ-চৈ করে বিস্কুট বিতরণ করেছেন ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরা বেগম।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের স্যারেরা স্কুলে আসতে বলেছেন তাই এসেছি।’ আর সেখানে উপস্থিত অভিভাবকরা বলেন, ‘এভাবে বিস্কুট বিতরণ করা ঠিক হচ্ছে না। বর্তমান সময়ে কখন শিশুরা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হবে একমাত্র আল্লাহই জানেন।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা মনিরা বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থীর বাড়ি গিয়ে বিস্কুট দিয়েছি, আর কিছু শিক্ষার্থীকে স্কুলে দিচ্ছি।’
এ বিষয়ে শনিবার উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউল গণি ওসমানী বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে আমাদের শিক্ষা অফিসার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মাদ বলেন, ‘অভিযুক্ত ৪ স্কুলের প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে, নোটিশের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে বিস্কুট দেয়ার নিয়ম, যারা এ নিয়ম মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’