সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক ছাত্রলীগ নেতাসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর‘ছাত্রলীগের দখলে থাকা’ কক্ষে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দেশীয় পাইপগানসহ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে নগরীর শাহপরাণ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
শনিবার ভোরের দিকে শাহপরান থানার পুলিশ ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। আর ধর্ষণের ঘটনা ঘটে শুক্রবার রাতে।
মামলার আসামিরা হলেন- এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, রবিউল হাসান, তারেক আহমদ ও অর্জুন। এদিকে দীর্ঘদিন এমসি কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় অভিযুক্তদের কোনো পদ-পদবি নেই। কিন্তু কলেজের রাজনীতিতে তারা সক্রিয় ছিলেন। তারা মূলত সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রঞ্জিত সরকারের অনুসারী। গণধর্ষণে অভিযুক্তরা সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য নাজমুল ইসলামের সঙ্গে রাজনীতি করতেন বলেও জানা গেছে। একাধিক অনুষ্ঠানে রঞ্জিত সরকার ও ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল ইসলামের সঙ্গে তাদের ছবি রয়েছে।
ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক মো. জামাল উদ্দিন পুলিশের অভিযানের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে কক্ষে তল্লাশি কেন করা হয়েছে, এ বিষয়ে কোনো তথ্য ছাত্রাবাস কর্তৃপক্ষের কাছে নেই বলে তিনি জানান।
সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, ধর্ষণকারীদের শনাক্ত করতে শুক্রবার রাত থেকে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। ভোর সাড়ে চারটার দিকে শাহপরান থানার একদল পুলিশ ছাত্রাবাসে অবস্থান নেয়। পরে তল্লাশি করতে গিয়ে একটি কক্ষ থেকে পাইপগানসহ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসেন দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার এক দম্পতি। এ সময় স্বামীসহ ওই গৃহবধূকে সাইফুর রহমান ও তার সহযোগী ছাত্রলীগ কর্মীরা পার্শ্ববর্তী ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যান। পরে স্বামীকে আটকে রেখে ওই গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগ কর্মী রবিউল, তারেক, রনি, সাইফুর, মাহফুজ এবং অর্জুন। খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১০টার দিকে স্বামীসহ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে। পরে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।