সম্প্রতি চার শিশুর বিষয়ে আদালতের প্রশ্ন আপনি কি জুডিশিয়াল অফিসার নাকি সিল মারা অফিসার বলে বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহকে প্রশ্ন করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার চার শিশুর বিষয়ে আদালতের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে নির্দেশনা দেয়ার ঘটনা নিয়ে শুনানির সময় বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহর কাছে এমন প্রশ্ন করেন আদালত।
এ সময় তিনি (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ) নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন কত সালের এবং ধারা কয়টি তা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জানতে চান।
আদালত আরও জানতে চান আপনি মামলার অভিযোগ (এফআইআর) পড়ে সিল মেরে দিলেন দেখিলাম। এটা কোন ধরনের ম্যাজিস্ট্রেটের কাজ। এটা কি আপনি জুডিশিয়াল অফিসার হিসেবে ঠিক করেছেন।
এ সময় হাইকোর্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি সিল মারা অফিসার নাকি জুডিশিয়াল অফিসার?
রোববার (১১ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসব প্রশ্ন তোলে শুনানি নিয়ে আদেশ দেন। আদালতে আজ কারো পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। শুধু সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শিশুদের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর আগে ওই চার শিশুকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তলবে হাইকোর্ট উপস্থিত হন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ, ওসি মো. আকবর আলী ও চার শিশুর অভিভাবক।
সবার শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে আদেশ দিতে ২২ অক্টোবর পরবর্তী দিন ঠিক করা হয়।
এ ছাড়া ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে বাকেরগঞ্জ থানায় করা মামলার কার্যক্রম ২২ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলেও জানান আদালত। একই সঙ্গে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের নিরাপদে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বাকেরগঞ্জে ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের চার শিশুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশদাতা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ হাইকোর্টে উপস্থিত হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন। এর আগে সকালে তিনি আদালতে হাজির হন।
শনিবার (১০ অক্টোবর) রাতে এসে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন বলে আদালতকে জানান তিনি। বেলা সাড়ে ১১টায় সশরীরে তাকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে অভিভাবকসহ ওই চার শিশু ও বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) উপস্থিত থাকতেও বলা হয়। সে অনুযায়ী রোববার সকালে তারা হাইকোর্টে উপস্থিত হন।
এ বিষয়ে চার শিশুর বক্তব্য শুনতে তাদের বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে বিচারকের খাস কামরায় নিয়ে যাওয়া হয়।