১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ঘুমন্ত ও নিরস্ত্র বাঙ্গালীর উপর মানব ইতিহাসের জঘন্যতম ও নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ শুরু করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ কে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসাবে পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং পরে মন্ত্রীপরিষদ তা অনুমোদন করে। সেই প্রেক্ষিতে জাপানের টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বৃহস্পতিবার যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করেছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয় কালো ব্যাচ ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধে সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে। পরে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করে দোয়া (মোনাজাত) করা হয়। এছাড়া দিবসটি স্মরণে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বানী পাঠ করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্য এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বিশ্ব ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়। বাঙ্গালী জাতিকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করার অভিপ্রায়ে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী সেদিন যে পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছিলো তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। কিন্তু তারা বাংলার মুক্তিকামী মানুষকে দমিয়ে রাখতে পারে নাই। ত্রিশ লক্ষ প্রাণ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বীর বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিজয় ছিনিয়ে আনে। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে আমরা নিজস্ব স্বাধীনতা ও জাতীয় পরিচয় পেয়েছি। আমাদের এই স্বাধীনতার মুল্য আরো বেশি করে অনুধাবন করতে হবে আর সেজন্য ১৯৭১ সালের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক বেশি গবেষণা করতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে ও বিশ্বের কাছে গণহত্যার বিষয়টি তুলে ধরতে হবে। ভবিষ্যতে পৃথিবীর অন্য কোন প্রান্তে গণহত্যা সংগঠিত হতে না পারে সেলক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাথে একযোগে কাজ করে যাবে।