করোনা পরিস্থিতিতেও নিয়মিত জনসভা করে গিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা। হাজার হাজার মানুষের জমায়েতে হাতেগোনা কয়েক জনের মুখেই মাস্ক দেখা গিয়েছে। দেশে সংক্রমণ যখন লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলেছে, সেই সময় নির্বাচনী সভা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের এমন ‘গা ছাড়া’ মনোভাব নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছে। এ বার তা নিয়ে কমিশনকে কার্যত তুলোধনা করল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। কোভিডে এত মানুষের মৃত্যুর জন্য কার্যত কমিশনকেই দায়ী করল আদালত। এমনকি, বিধিনিষেধ মানা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা দেখাতে না পারলে ২ মে ভোটগণনা আটকে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে কমিশন
কমিশনকে ভর্ৎসনা করে প্রধান বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজকের এই পরিস্থিতির জন্য আপনারাই দায়ী। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাজনীতিকরা জনসভা করেছেন। পদযাত্রায় বেরিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেননি। আপনাদের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হওয়া উচিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অথচ দুঃখের বিষয়, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকেই, এই গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে। বেঁচে থাকলে তবেই তো গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করতে পারবেন মানুষ!’’কেন রাজনীতিকদের জনসভা করার অনুমতি দেওয়া হল, তা নিয়ে কমিশনকে একহাত নেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে বেঁচে থাকা এবং নিরাপদে থাকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাকি সব কিছু পরের বিষয়। যখন একের পর এক সভা হচ্ছিল, তখন কি আপনারা অন্য কোনও গ্রহে ছিলেন?’’ এর পরেই আসন্ন ভোটগণনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক গণনা কেন্দ্রে কোভিডবিধি মেনে চলতে হবে। নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বজায় রাখতে হবে পরিচ্ছন্নতা। ভোটকর্মীদের মাস্ক পরা যেমন বাধ্যতামূলক, তেমনই সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে। তবেই গণনা করতে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে রাজ্য স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।’’
ভোটগণনা কেন্দ্রে কোভিডবিধি অনুযায়ী কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তার নীলনকশা জমা দিতে বলা হয়েছে কমিশনকে। তাতে যদি আদালত সন্তুষ্ট হয়, তবেই ২ মে গণনা করতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
আনন্দবাজার সংবাদ