নারায়ণগঞ্জে র্যাবের অভিযানে আট হাজার ইয়াবাসহ তিন পাচারকারী আটক হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র্যাব ১১ এর অ্যাডিশনাল এসপি জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
আটকরা হলেন- খাইরুল আমিন, ফারজানা আক্তার সুমি ও আনোয়ারা।
তাদেরকে বুধবার দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে ডিএমপির ঢাকার সায়েদাবাদ ও নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকা আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, কক্সবাজারের একজন ইয়াবা পাচারকারী দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিতভাবে কৌশলে বাসযোগে ইয়াবা পাচার করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ইয়াবা পাচারকারী একই কৌশলে কক্সবাজার হতে বাসযোগে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি দল সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাফি ফিলিং স্টেশনের সামনে পাকা রাস্তার উপর চেকপোস্ট স্থাপন করে।
চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির সময় কক্সবাজার হতে ঢাকাগামী প্রেসিডেন্ট ট্রাভেলস সিপিং কোচ থেকে নেমে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহভাজন খাইরুল আমিনকে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খাইরুল আমিনের কথা ও আচরণে অসংলগ্নতা ও অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পেলেও ইয়াবা পাচারের বিষয়ে সে অস্বীকার করে। তারপর নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে খাইরুল আমিন স্বীকার করে যে ওই বাসে তার সিটের কেবিনের পাশের গ্লাস সংলগ্ন বাসের ফ্রেমের সঙ্গে স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো চুম্বক দ্বারা ইয়াবা ট্যাবলেট আটকানো আছে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী অভিযান পরিচালনা করে ডিএমপির সায়েদাবাদ এলাকা হতে উক্ত বাসে তার সিটের কেবিনের বাম পাশের গ্লাস সংলগ্ন বাসের ফ্রেমের সাথে চুম্বক দিয়ে আটকানো ও স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ৩টি পোটলা পাওয়া যায়। পোটলাগুলো খুললে ৩০টি পলিপ্যাকে রক্ষিত ছয় হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে খাইরুল আমিনের তথ্যানুযায়ী দুপুর ৩টায় নারায়ণগঞ্জের দক্ষিণ সানারপাড় এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী ফারজানা আক্তার সুমিকে আটক করা হয় ও তার বাসা থেকে ১২০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। বিকেল ৪টায় পূর্ব সানারপাড় এলাকায় পৃথক আরেকটি অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী আনোয়ারাকে আটক করা হয় ও তার বাসা থেকে ৮০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তিনটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আট হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
খাইরুল আমিনের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ এলাকায়। সে দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে বাসযোগে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় ইয়াবা পাচার ও সরবরাহ করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় ২০১৫ সালে একটি হত্যা মামলা এবং ডিএমপির মতিঝিল থানায় মাদক আইনে একটি মামলা রয়েছে। প্রায় তিন বছর জেলে থাকার পর বছর খানেক আগে জামিনে এসেছে।
পৃথক অভিযানে আটক আসামি ফারজানা আক্তার সুমির স্বামী জাবেদের বাড়ি চট্টগ্রাম শহরে। স্বামী-স্ত্রী উভয়েই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের নামে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ও মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ফারজানার স্বামী প্রায় তিন বছর ধরে ওই মামলায় জেল হাজতে আছে। সুমিও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলার পলাতক আসামি।
আটক অপর আসামি আনোয়ারার স্বামী এনামুল হক জিয়ার বাড়ি কক্সবাজার জেলায়। তারাও স্বামী-স্ত্রী উভয়েই চিহ্নিত মাদক পাচারকারী। তাদের নামেও মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
আটক আনোয়ারার স্বামী এনামুল হক জিয়াও বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো স্বীকার করে যে, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে। তাদের একমাত্র পেশা ছিল মাদক ব্যবসা।